হাওয়াই ভালোবাসা


হেডলাইনটা শুনে অনেকে হয়ত ভাবছেন,সেটা আবার কি? আবার অনেকে মনে মনে ভাবছেন ও এটাতো পুরান জিনিস।হ্যা আপনারা সবাই সঠিক। যারা অনলাইন জগতে অনেক জানাশুনা আছে তাদের কাছে বিষয়টা অনেক পুরানো। আর যারা অনলাইন জগতে অনভিজ্ঞ তাদের কাছেই বিষয়টা অনেক ভাবার বিষয়। আজ এই বিষয়ই কিছু লিখার চেষ্টা করবঃ আধুনিক যুগের এই আধুনিক ভালোবাসা মানুষকে অনন্দ দিচ্ছে ঠিকি কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃত ভালোবাসার আসল স্বাদ। স্মার্টফোন এখন সবার হাতে হাতে।ফোন খুললেই নিমেষেই চলে যাচ্ছে মানুষ রঙ্গিন দুনিয়ায়। কি নেই এই ছোট্ট যন্ত্রটিতে, বিজ্ঞানের এই আমুল পরির্বতনে অনেকে লাভোবান হচ্ছে। আবার কেউ এর সঠিক ব্যবহার না যেনে দেউলিয়া হচ্ছে। মানুষের জীবনের সবথেকে বড় অনুভূতির নাম হচ্ছে ভালোবাসা। মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকে ভালোবাসার এই বিস্তার শুরু। পৃথিবীর প্রথম মানব সন্তান হলেন আদম(আঃ) তার ভালোবাসার অনুভূতি আসার কারনে সৃষ্টিকর্তা তার জন্য হাওয়া (আঃ) কে তৈরি করেন।হযরত হাওয়া (আঃ) কে সৃষ্টির মাধ্যমে আদম(আঃ) এর ভালোবাসার পুর্ণতা দেন। সেই থেকেই শুরু ভালোবাসার এই অনুভুতি প্রকাশের। পৃথিবীর প্রথম মানুষ হত্যাও এ ভালোবাসার কারনে।আদিম যুগ খেকে শুরু করে অদ্যবতি পর্যন্ত ভালোবাসা বা প্রেমের প্রচলন চলছে।ভবিষ্যতেও এর ব্যতিক্রম হবে না। পৃথিবিী ধ্বংস হওয়ার আগ পর্যন্ত চলবে মানুষের এই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।অসংখ্য রাজা বাদশারা তাদের ক্ষমতা ত্যাগ করেছে ভালোবাসা জন্য। ইতিহাস ঘাটলে অসংখ্য প্রেমের কাহিনে আমরা জানতে পারি।ইউসুফ-জুলেখা,শিরি-ফরহাদ,মমতাজ-শাহজাহানের মত অসংখ্য প্রেমের কাহিনি জানা যায়। কিন্তু এই ভালোবাসা এখন চলে আসছে মানুষের হাতের এই ছোট্ট যন্ত্রটির ভিতরে। পর্দার এপারে ওপারে চলছে ভালোবাসার এই আদান প্রদান । মুল্যহীন হয়ে পরছে মানুষের সবথেকে গভীর অনুভূতির মাধ্যম এই ভালোবাসা। বর্তমান সময়ে প্রেমে জড়াতে যত সময় না লাগে তার থেকে কম সময় লাগে প্রেম ভাঙতে।কারন প্রেম ভালোবাসার বাজার এখন অনেক বড়। কেননা পর্দার উপারে অসংখ্য নর-নারী ভীর করে আছে,ফেসবুক,টাইটার,ইমো নামক অসংখ্য সাইডগুলোতে । এই ভালোবাসা যতটা না সহজ তার থেকে আরো বেশি ভয়ংকর।আগের সময় ক্যামেরা সহজ বস্তু না হওয়ায় মন চাইলেই ছবি তুলতে পারতোনা। তেমনিভাবে ছবি শেয়ার ও করতে পারতোনা।মোবাইল ফোন না থাকায় এস.এম.এসের ব্যবস্থা ছিলনা।যার কারনে হাতের লেখা চিঠি ব্যবহার করত। মানুষজন মনের সকল অনুভুতি মিশিয়ে একটা চিঠি লিখতো। তখনকার সময়ে চিঠির কদর ছিল অনেক বেশি।যাকে চিঠি লেখা হতো খুব যতন করে আগলিয়ে রাখত সেই চিঠি।কিন্তু এখন আর সেটা করে না। লোকজন ভিডিও কল করছে নিজেকে অন্যের কাছে প্রর্দশন করছে।আজকে তাকে কালকে আরেকজনকে । এভাবেই চলছে এই র্ভাচুয়াল ভালোবাসা।এখন আর বাবা মাকে মিথ্যা বলে ঘর থেকে বের হয়ে প্রিয়জনের সাথে দেখা করতে যেতে হয়না।পাড়ার বড় ভাইদের নজর এড়িয়ে কথা বলা লাগেনা। একটা র্স্মাটফোন আর যেকোন সাইডের আইডি থাকলেই হয়।অবাধে চলবে এই র্ভাচুয়াল জগতের অবাধ মেলোমেশা। এবার আসা যাক এর কিছু খারাপ দিক নিয়ে আলোচনা।র্ভাচুয়াল ভালোবাসায় আপনি যদি না জানেন আসলে কে বসে আসে অপর প্রান্তে। প্রেফাইল পিকচার দেখে ভালোবাসালে আপনার কপালে বেশিরভাগ সময় বিপদ আসার সম্ভবনাই বেশি।অনলাইন বিষয়টাকে কাজে লাগিয়ে অনেক মানুষ অসাধু উপায়ে অর্থ কামিয়ে নিচ্ছে। পাশাপাশি ভালোবাসার মত পবিত্র জায়গায় ভিডিও সেক্সের মত শব্দের প্রসার ঘটসে।প্রোফাইল পিকচারে মেয়ের ছবি দিয়ে ছেলে মানুষ প্রেম চালিয়ে যাচ্ছে।কিছু টাকা বা অন্য কিছু কামানোর আশায়। কেউ কেউ তো আবার সেক্সের মত বিষয়ের বিভিন্ন লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে টাকা কামাচ্ছে ।র্ভাচুয়াল লাভ এই সেক্টর এখন অনেক বিশাল। পশ্চিমাদের এই সংস্কৃতি এখন আমাদের দেশেও ব্যাপক বিস্তার লাভ করছে।এতে লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমান বেশি হচ্ছে।অল্প বয়সে ছেলে মেয়েরা অনেক খারাপ কাজে জড়িয়ে যাচ্ছে।মেধাশূন্য হয়ে পরছে আমাদের এই সমাজ। তবে এদকি থেকে আমাদের বর্তমান সরকার নজর দিয়েছে।এটা একটি আশার দিক।অনকেগুলো পর্ন সাইড এবং র্ভাচুয়াল ভালোবাসার সাইডগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে যারা বিভিন্ন অসৎ পন্থায় টাকা কামানোর চেষ্টা করে তাদেরকেও নজরে আনা দরকার। যেসব ব্যক্তিরা নতুন করে অনলাইন ব্যবহারে অসক্ত হচ্ছেন, তাদের কাছে অনুরোধ তারা যেন অনলাইনে বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনেক সর্তকতা অবলম্বন করেন। কেননা আপনি ভালোবাসার মোহে পরে আপনার ব্যক্তিগত মুর্হুতের কিছু শেয়ার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনি সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।আশা করব সকলেই এই বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করবেন।