পর্ণোগ্রাফির ভয়াবহতা

যুগের হাওয়াবদল বা সময়ের পরিবর্তন, যেটাই বলিনা কেন বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কথায় আছে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে  চলতে না পারলে নাকি অনেক পিছিয়ে পরতে হয়। যারা সময়ের সাথে তাল মিলেয়ে চলছে তারাই নাকি এখন সমাজকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আর তাল মিলিয়ে চলতে চলতে কখন যে আমরা আমাদের আসল পরিচয় হারিয়ে ফেলছি তা খেয়ালি করছিনা। অনেক আগে আমরা যখন ঠিক ছোট ছিলাম তখন গ্রামে গ্রামে যাত্রাপালা হত, টেলিভিশনের বিস্তার তখনো এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠে নাই দুরদুরান্ত থেকে মানুষজন এসে যাত্রা দেখত। তখনকার সময় এটাই ছিল মানুষজনের বিনোদনের একটি মাধ্যম। সময়ের পরিবর্তন হল, টেলিভিশন আসলো মানুষজন টিভিতে মগ্ন হতে থাকলো, সপ্তাহে একদিন বাংলা ছিনেমা হত সেটা দেখার জন্য মানুষ ভীড় জমাত যার ঘরে টেলিভিশন আছে। রাজ্জাক শাবানা, ববিতা আলমগির, এই সমস্ত নায়ক নায়িকাদের জনপ্রিয়তা তখন আকাশ্চুম্বি। বর্তমানেও তাদের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। কারন বাংলা ছিনেমার সোনালি যুগ তাদের সময়ই বেশি ছিল। ডিস লাইনের প্রসারতা যখন আস্তে আস্তে ব্যাপক হতে লাগলো, সাথে সাথে আমাদের সমাজে ঠুকে পড়লো ভিনদেশি সংস্কৃতি আমরা মগ্ন হয়ে গেলাম ভিনদেশি নাটক ছিনেমার প্রতি। সময়টা যদি সেই জায়গাটায় আটকে থাকত কোন সমস্যা ছিলনা। সমস্যাটা শুরু হল যখন ইন্টারনেট ঠুকে পড়লো। বিজ্ঞানের অনেক বড় একটি আবিস্কার হল এই ইন্টারনেট। এই ইন্টারনেট এর সুবাধে মানুষ এখন জীবনটাকে অনেক সহজ করে নিয়েছে। কম্পিউটার,ল্যাপটপ,মুঠোফোন এর ব্যাবহার ইন্টারনেটের কারণে হয়েছে আরো অনেক গতিশীল। মুহূর্তেই চলে যাচ্ছে যেখানে খুশি সেখানে।সারা পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়। স্মার্টফোন অথবা কম্পিউটারের মনিটরে ক্রমাগতই উকি দেয় বিভিন্ন পর্ণ ছবি বা সাইডের লিঙ্ক। অনায়াসেয় আমরা ঠুকে যেতে পারছি পর্ণ বা নিল জগতের দুনিয়ায়। কিশোর থেকে বৃদ্ধ, কেউ বাদ যাচ্ছেনা এই থাবা থেকে। সবাই নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছে রঙ্গিন দুনিয়ায়। এভাবে চলতে চলতে আমরা বুজতেই পারছিনা আমরা আমাদের কি বড় ক্ষতি করছি।
যারা মনে করেন নিল ছবি দেখে আপনি আপনার প্রিয়জনের সাথে অনেক ভালো সময় কাটাতে পারবেন তাহলে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে অনেক বসেস কমের বিপদ। আপনাকে এখনি এই অভ্যাস বদলানোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
গবেষকরা বলছে, কেউ যদি প্রতিদিন পর্ণগ্রাফি দেখে সহবাস করে তাহলে তার রোমাঞ্চটাই শেষ হয়ে যায়। তার ভিতর নতুনত্ব বলে আর কিছু থাকেনা। সহবাসের আনন্দ উপভোগ করার জন্য আমাদের মস্তিষ্কের অন্যতম নিউরো ট্রান্সমিটার ডোপামিন দায়ি। এই ডোপামিন ও পর্ণগ্রাফির কারণে বাসি কাজ করতে পারেনা। শারিরিক অসুস্থতার কথাতো আছেই। বেশি বেশি এই ছবি দেখলে মানুষের মস্তিষ্কও আস্তে আস্তে নিস্তেজ হতে থাকে। কাজ কর্মের আগ্রহও হারিয়ে যায়। আপনার সুন্দর মওনটা অনেক নংরা হয়ে যায়। পাশাপাশি মেজাজ ও অনেক খিটখিটে হয়ে যায়। 
গবেষকরা আরো বলছেন, যারা বেশি পর্ণ দেখেন তাদের বিবাহিত জীবনও অনেক ঝুকির মাঝে আছে। বিবাহ বিচ্ছেদের ও অন্যতম একটি কারন এটি। যৌন আচরনেও এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই অভ্যাস যাদের আছে তাদের এখান থেকে ফিরে আসাটা অনেক জরুরি। 
বাবা মায়ের ও উচিৎ সন্তানের ওপর খেয়াল রাখা তারা যেন এই জগতে প্রবেশ না করে। যত বেশি সম্ভব সন্তানকে অনলাইন সুরক্ষা দিতে হবে। নীল ছবির এই ভয়াল থাবা থেকে আমরা যাতে নিজেকে বাচিয়ে রাখতে পারি সেটাই এখন সবথেকে বড় চাওয়া।